উত্তর::ভূমিকা: ফরাসি প্রজাতন্ত্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় পার্লামেন্ট এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু আইন প্রণয়নেরই দায়িত্ব পালন করে না, বরং সরকারের উপর নজরদারি ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। ১৯৫৮ সালের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের সংবিধান অনুযায়ী, ফরাসি পার্লামেন্ট দুটি কক্ষ নিয়ে গঠিত: জাতীয় সংসদ (National Assembly) এবং সিনেট (Senate)। এই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট ব্যবস্থা ফরাসি গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা এবং কার্যকরী শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেছে। নিচে ফরাসি পার্লামেন্টের গঠন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
১। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট ব্যবস্থা: ফরাসি পার্লামেন্ট একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা। এর দুটি কক্ষ হলো জাতীয় সংসদ (National Assembly) এবং সিনেট (Senate)। জাতীয় সংসদ নিম্নকক্ষ এবং সিনেট উচ্চকক্ষ হিসেবে পরিচিত। এই ব্যবস্থা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। যদিও দুটি কক্ষই আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়, জাতীয় সংসদের ক্ষমতা সাধারণত বেশি। জাতীয় সংসদের আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সিনেটের উপর প্রাধান্য থাকে, বিশেষত বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে।
২। জাতীয় সংসদ: জাতীয় সংসদ বা অ্যাসেম্বলি ন্যাশনালে (Assemblée Nationale) মোট ৫৭৭ জন সদস্য রয়েছেন, যাদেরকে ডেপুটি (Députés) বলা হয়। এই সদস্যরা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। প্রতিটি সদস্য একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনি এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। তাদের কার্যকাল পাঁচ বছর। যদি রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন, তবে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংসদ ফরাসি জনগণের ইচ্ছার সরাসরি প্রতিফলন ঘটায় এবং এটি সরকারের মূল কেন্দ্রবিন্দু।
৩। সিনেট: সিনেট বা সেনাতে (Sénat) মোট ৩৪৮ জন সদস্য রয়েছেন, যাদেরকে সেনেটর (Sénateurs) বলা হয়। সিনেটররা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। তারা স্থানীয় ও আঞ্চলিক জনপ্রতিনিধিদের একটি নির্বাচক মণ্ডলী দ্বারা নির্বাচিত হন। সিনেটরদের কার্যকাল ছয় বছর এবং প্রতি তিন বছর অন্তর অর্ধেক সদস্যের নির্বাচন হয়। সিনেট স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এটি সংবিধানের অভিভাবক হিসেবেও কাজ করে, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪। সদস্যদের যোগ্যতা: ফরাসি পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা প্রয়োজন। একজন ব্যক্তিকে ফরাসি নাগরিক হতে হবে এবং তার বয়স জাতীয় সংসদের জন্য কমপক্ষে ১৮ বছর এবং সিনেটের জন্য কমপক্ষে ২৪ বছর হতে হবে। এছাড়া, তাকে কোনো রাজনৈতিক পদ বা সরকারি চাকরি থেকে অযোগ্য ঘোষিত হওয়া যাবে না। এই যোগ্যতাগুলি নিশ্চিত করে যে নির্বাচিত সদস্যরা দেশের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য বজায় রাখেন এবং প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা সম্পন্ন হন।
৫। পার্লামেন্টের অধিবেশন: ফরাসি পার্লামেন্টের সাধারণত একটি নিয়মিত অধিবেশন থাকে যা অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত চলে। তবে, জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন। এই অধিবেশনগুলি আইনের খসড়া, বাজেট, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়া পার্লামেন্টের সদস্যদের দেশের শাসনকার্যে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে।
৬। স্পিকার নির্বাচন: প্রতিটি কক্ষেরই একজন করে স্পিকার বা সভাপতি থাকেন, যিনি কক্ষের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জাতীয় সংসদের সভাপতিকে (President of the National Assembly) সংসদের সদস্যরা নির্বাচিত করেন। একইভাবে, সিনেটের সভাপতিকে (President of the Senate) সিনেটররা নির্বাচিত করেন। এই সভাপতিরা কক্ষের শৃঙ্খলা বজায় রাখেন, বিতর্কের সময় নির্ধারণ করেন এবং আইনি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করেন।
৭। স্থায়ী কমিটি: ফরাসি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই স্থায়ী কমিটি রয়েছে। এই কমিটিগুলি নির্দিষ্ট বিষয়ে আইনের খসড়া পরীক্ষা করে। প্রতিটি স্থায়ী কমিটি একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র, যেমন প্রতিরক্ষা, অর্থ, বা সামাজিক বিষয় নিয়ে কাজ করে। এই কমিটিগুলির কাজ আইনি প্রক্রিয়াকে আরও সুশৃঙ্খল এবং দক্ষ করে তোলে। কমিটির রিপোর্টগুলি সাধারণত মূল বিতর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
৮। সাংবিধানিক পরিষদ: যদিও সাংবিধানিক পরিষদ (Constitutional Council) সরাসরি পার্লামেন্টের অংশ নয়, এটি পার্লামেন্টের আইন প্রণয়নের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। এর প্রধান কাজ হল পার্লামেন্ট কর্তৃক প্রণীত আইনগুলি সংবিধানসম্মত কিনা তা পরীক্ষা করা। এই পরিষদ পার্লামেন্টের ক্ষমতার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি নিশ্চিত করে যে কোনো আইন সংবিধানের মূল নীতি লঙ্ঘন করছে না।
৯। রাজনৈতিক দলসমূহ: ফরাসি পার্লামেন্টের সদস্যরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। জাতীয় সংসদ এবং সিনেটে বিভিন্ন দলীয় জোট বা গ্রুপ গঠিত হয়। এই দলগুলি সরকারের নীতি ও আইনের খসড়ার উপর প্রভাব ফেলে। সরকার সাধারণত পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সমর্থন নিয়ে গঠিত হয়। দলীয় শৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক ঐক্য আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
১। আইন প্রণয়ন ক্ষমতা: ফরাসি পার্লামেন্টের প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা। এটি জাতীয় সংসদ এবং সিনেট উভয় কক্ষেই সম্পন্ন হয়। আইনের খসড়া (bill) সরকার বা পার্লামেন্টের কোনো সদস্য দ্বারা উত্থাপিত হতে পারে। এটি উভয় কক্ষেই বিতর্কের পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হতে হয়। যদিও জাতীয় সংসদকে এই ক্ষেত্রে বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তবে সিনেটও আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২। অর্থনৈতিক ক্ষমতা: ফরাসি পার্লামেন্ট রাষ্ট্রের বাজেট ও আর্থিক নীতি অনুমোদন করে। সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট প্রথমে জাতীয় সংসদে পেশ করা হয় এবং তারপর সিনেটে পাঠানো হয়। বাজেট পাস করার ক্ষমতা প্রধানত জাতীয় সংসদের হাতে থাকে। পার্লামেন্ট সরকারের ব্যয় নিরীক্ষণ করে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। এই ক্ষমতা সরকারকে আর্থিক বিষয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে।
৩। সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ: পার্লামেন্ট, বিশেষত জাতীয় সংসদ, সরকারের উপর নজরদারি করে। সদস্যরা মন্ত্রীদের কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন এবং সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক করতে পারেন। এটি সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করে। পার্লামেন্টের এই ক্ষমতা রাজনৈতিক জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। এটি সরকারের স্বচ্ছতা বাড়ায়।
৪। অনাস্থা প্রস্তাব: জাতীয় সংসদ সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে। যদি এই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এই ব্যবস্থা সরকারকে সর্বদা জনগণের প্রতিনিধিদের আস্থা বজায় রাখতে বাধ্য করে। এটি সংসদীয় ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যা সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিরোধ করে।
৫। সংবিধান সংশোধন: ফরাসি পার্লামেন্ট সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব প্রথমে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হতে হয়। এরপর এটি হয় গণভোটে বা পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশনে তিন-পঞ্চমাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অনুমোদিত হতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি সংবিধানের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
৬। আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন: ফরাসি পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং জোটের চুক্তি অনুমোদন করে। এই ক্ষমতা ফরাসি সরকারের বৈদেশিক নীতির উপর সংসদীয় নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে। গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তি পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়া কার্যকর হতে পারে না। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭। জরুরি অবস্থা ঘোষণা: জরুরি অবস্থা বা সামরিক আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। এই ক্ষমতা পার্লামেন্টকে নির্বাহী ক্ষমতার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। এর মাধ্যমে, সরকার একতরফাভাবে দেশের জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করতে পারে না, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে রক্ষা করে।
৮। স্থায়ী কমিটিগুলির কাজ: পার্লামেন্টের স্থায়ী কমিটিগুলি বিভিন্ন নীতি ও আইন সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে। এই কমিটিগুলি বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। তাদের তৈরি করা প্রতিবেদনগুলি পার্লামেন্টের মূল বিতর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও তথ্যাশ্রয়ী ও কার্যকর করে তোলে।
৯। রাষ্ট্রপতির উপর নিয়ন্ত্রণ: যদিও ফরাসি প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত শক্তিশালী, পার্লামেন্টের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির কিছু সিদ্ধান্তের উপর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি প্রেসিডেন্ট কোনো আইন ভেটো দেন, পার্লামেন্ট সেই আইন পুনর্বিবেচনা করতে পারে। এটি ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১০। গণপ্রতিনিধিত্ব: ফরাসি পার্লামেন্ট জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। পার্লামেন্টের সদস্যরা তাদের নির্বাচনি এলাকার জনগণের মতামত, চাহিদা এবং সমস্যাগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরেন। এটি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এবং গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি মজবুত করে। পার্লামেন্টের সদস্যরা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি হিসেবে কাজ করেন।
১১। বিচারিক ভূমিকা: কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, ফরাসি পার্লামেন্ট বিচারিক ক্ষমতাও প্রয়োগ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ বা অন্য গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠলে, পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ আদালত তার বিচার করতে পারে। এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তিদেরও জবাবদিহি নিশ্চিত করে।
১২। ক্ষমতার বিভাজন: ফরাসি সংবিধানে ক্ষমতার বিভাজন নীতিকে কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। পার্লামেন্ট আইন প্রণয়ন করে, সরকার তা কার্যকর করে এবং বিচার বিভাগ আইন প্রয়োগ করে। এই বিভাজন নির্বাহী, আইনসভা এবং বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখে।
১৩। গণভোটের অনুমোদন: কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে সাংবিধানিক সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, সরকার গণভোটের প্রস্তাব করতে পারে। এই প্রস্তাব পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষ। গণভোটের মাধ্যমে জনগণ সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে।
উপসংহার: ফরাসি পার্লামেন্ট, তার দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমে, ফরাসি গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু আইন প্রণয়নেরই দায়িত্ব পালন করে না, বরং সরকারের উপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। যদিও পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, পার্লামেন্ট তার সাংবিধানিক ক্ষমতা ও কার্যকারিতার মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফরাসি পার্লামেন্টের গঠন:-
১। 🎨 দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট ব্যবস্থা।
২। 🏛️ জাতীয় সংসদ।
৩। 🏰 সিনেট।
৪। 📜 সদস্যদের যোগ্যতা।
৫। 🗓️ পার্লামেন্টের অধিবেশন।
৬। 🗣️ স্পিকার নির্বাচন।
৭। 🤝 স্থায়ী কমিটি।
৮। ⚖️ সাংবিধানিক পরিষদ।
৯। 👥 রাজনৈতিক দলসমূহ।
ফরাসি পার্লামেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:-
১০। 🖋️ আইন প্রণয়ন ক্ষমতা।
১১। 💰 অর্থনৈতিক ক্ষমতা।
১২। 🧐 সরকারের উপর নিয়ন্ত্রণ।
১৩। ⚠️ অনাস্থা প্রস্তাব।
১৪। ⚖️ সংবিধান সংশোধন।
১৫। 🌍 আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন।
১৬। 🚨 জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
১৭। 📋 স্থায়ী কমিটিগুলির কাজ।
১৮। 👨⚖️ রাষ্ট্রপতির উপর নিয়ন্ত্রণ।
১৯। 🫂 গণপ্রতিনিধিত্ব।
২০। ⚖️ বিচারিক ভূমিকা।
২১। ⚖️ ক্ষমতার বিভাজন।
২২। 🗳️ গণভোটের অনুমোদন।
ফরাসি পার্লামেন্ট, বিশেষত জাতীয় সংসদ, ফরাসি রাজনৈতিক ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৫৮ সালের পঞ্চম প্রজাতন্ত্রের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকে পার্লামেন্টের ক্ষমতা কিছুটা হ্রাস পেলেও, ১৯৮০-এর দশকে প্রধানমন্ত্রী জ্যাক শিরাকের নেতৃত্বে পার্লামেন্ট তার ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে সহাবস্থান (Cohabitation) নামে একটি নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দল ভিন্ন ছিল। সম্প্রতি ২০১৭ সালের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ’র দল লা রিপাবলিক অন মার্স! (La République en Marche!) জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ২০২২ সালের জুন মাসের নির্বাচনে ম্যাক্রঁ’র দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে, পার্লামেন্টে এক নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে সরকারকে বিরোধী দলের সমর্থনের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এই ঘটনাগুলো ফরাসি পার্লামেন্টের ক্ষমতার গুরুত্ব এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় এর ভূমিকা তুলে ধরে।
