- readaim.com
- 0
উত্তর::ভূমিকা: একটি দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বোঝার জন্য GNP ব্যবধান একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি সম্ভাব্য মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) এবং প্রকৃত GNP-এর মধ্যে পার্থক্যকে তুলে ধরে। এই ব্যবধানের মাধ্যমে একটি দেশের সম্পদের অপূর্ণ ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক মন্দার গভীরতা পরিমাপ করা হয়। কার্যকর অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের জন্য GNP ব্যবধান বিশ্লেষণ অপরিহার্য।
GNP – এর পূর্ণরূপ হচ্ছে- Gross National Product বা মোট জাতীয় উৎপাদন। সাম্ভাবনাময় Gross National Product বা মোট জাতীয় উৎপাদন থেকে বাস্তব GNP বাদ দিলে যে মান পাওয়া যায় তাকে GNP ব্যবধান বলে।
GNP ব্যবধানের মান ধনাত্নক, শূন্য, ঋণাত্নক হতে পারে। GNP ব্যবধান এর মান ধনাত্নক হলে অর্থনীতিতে মন্দা ও বেকারত্ব দেখা দেয়। GNP ব্যবধান এর মান শূন্য হলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করে। GNP ব্যবধান ঋণাত্নক হলে অর্থনীতিতে অধিক হারে মূদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। নিম্নে একটি চিত্রের সাহায্যে GNP ব্যবধান দেখানো হলো:
সম্ভাবনাময় GNP | বাস্তব GNP | GNP ব্যবধান | অবস্থা |
৫০০ | ৩০০ | ২০০ | মন্দা ও বেকারত্ব সৃষ্টি হবে |
৫০০ | ৫০০ | ০ | স্থিতিশীল অর্থনীতি |
৫০০ | ৭০০ | -২০০ | অধিক হারে মুদ্রাস্ফীতি |


আমরা বাম পার্শে / উপরের চিতে দেখতে পাচ্ছি যে, ভূমি অক্ষে সময় T ও লম্ব অক্ষে GNP দেখানো হয়েছে। MN রেখা হলো সম্ভাবনা GNP রেখা। MR রেখা হলো বাস্তব GNP রেখা। MS পরিধিতে সম্ভাবনাময় GNP> বাস্তব GNP’র ফলে GNP ব্যধান > 0 হবে। তাই এখানে মন্দা ও বেকারত্ব দেখা দিবে। SH পরিধিতে সম্ভাবনাময় GNP < বাস্তব GNP’র ফলে GNP ব্যবধান < 0 হবে। যার ফলে অধিক মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিবে। S ও H বিন্দুতে সম্ভাবনাময় GNP = বাস্তব GNP’র ফলে GNP ব্যবধান = 0 হবে। এখানে অর্থনীতিতে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করে।
উপসংহার: পরিশেষে, GNP ব্যবধান একটি দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্য মূল্যায়নের জন্য এক অপরিহার্য নির্দেশক। এটি সম্ভাব্য ও প্রকৃত উৎপাদনের মধ্যে পার্থক্য দেখিয়ে অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারকদের সঠিক পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করে। ধনাত্মক বা ঋণাত্মক উভয় ব্যবধানই অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য এই ব্যবধানকে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কল্যাণের প্রতিফলন ঘটায়।
GNP বা মোট জাতীয় উৎপাদন হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশের নাগরিক দ্বারা উৎপাদিত সমস্ত চূড়ান্ত পণ্য এবং পরিষেবার মোট আর্থিক মূল্য।
GNP ব্যবধান দুই ধরনের হতে পারে: ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক। যখন প্রকৃত GNP সম্ভাব্য GNP-এর চেয়ে কম হয়, তখন তাকে ঋণাত্মক ব্যবধান বা মন্দা ব্যবধান (Recessionary Gap) বলে। এর ফলে বেকারত্ব বাড়ে এবং মুদ্রাস্ফীতি কমে। অন্যদিকে, যখন প্রকৃত GNP সম্ভাব্য GNP-এর চেয়ে বেশি হয়, তখন তাকে ধনাত্মক ব্যবধান বা মুদ্রাস্ফীতির ব্যবধান (Inflationary Gap) বলে। এই অবস্থায় অর্থনীতিতে অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হয় এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়ে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ব্যবধান মোকাবেলায় রাজস্ব ও মুদ্রানীতি ব্যবহার করে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করে।

