• Home
  • Class 0-12
  • Grammar
    • Bangla Grammar
    • English Grammar
    • Arabic Grammar
  • Computer
    • MS Word
  • Jobs Study
    • BCS
    • Bank
    • Primary
    • Govt. job
    • Nibandhon
    • Medical Admission
    • University Admission
    • Army/Police/BDR/Anchar
  • Jobs
  • News
    • Home
    • Class 0-12
    • Grammar
      • Bangla Grammar
      • English Grammar
      • Arabic Grammar
    • Computer
      • MS Word
    • Jobs Study
      • BCS
      • Bank
      • Primary
      • Govt. job
      • Nibandhon
      • Medical Admission
      • University Admission
      • Army/Police/BDR/Anchar
    • Jobs
    • News
  • mdreadaim@gmail.com
  • Read at Home
Login > Register
Read Aim
Read Aim
  • Home
  • Class 0-12
  • Grammar
    • Bangla Grammar
    • English Grammar
    • Arabic Grammar
  • Computer
    • MS Word
  • Jobs Study
    • BCS
    • Bank
    • Primary
    • Govt. job
    • Nibandhon
    • Medical Admission
    • University Admission
    • Army/Police/BDR/Anchar
  • Jobs
  • News
  • readaim.com
  • 0
শিল্প বিপ্লব কী? শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলি আলোচনা কর।

প্রশ্ন:- শিল্প বিপ্লব কী? শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলি আলোচনা কর।

উত্তর::ভূমিকা: শিল্প বিপ্লব শুধু কিছু কারখানার পরিবর্তন ছিল না, এটি ছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক বিশাল বাঁক। এটি আমাদের জীবনযাত্রা, কাজ করার পদ্ধতি এবং সমাজকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজিয়েছিল। হাতে তৈরি পণ্যের যুগ থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ মেশিনের সাহায্যে ব্যাপক উৎপাদন শুরু করে। এর ফলে শুধু অর্থনীতিতেই নয়, বরং মানুষের সামাজিক জীবন, সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনাতেও ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

শিল্প বিপ্লব-এর পরিচয়:-

শাব্দিক অর্থ: শিল্প বিপ্লব শব্দটিকে ভাঙলে দুটি অংশ পাওয়া যায়— ‘শিল্প’ (Industry) এবং ‘বিপ্লব’ (Revolution)। ‘শিল্প’ বলতে সাধারণত উৎপাদন ও কারখানার কাজকে বোঝানো হয়, আর ‘বিপ্লব’ হলো এমন এক দ্রুত ও বড় পরিবর্তন যা কোনো ব্যবস্থা বা সমাজের সম্পূর্ণ কাঠামো বদলে দেয়। সুতরাং, এর শাব্দিক অর্থ হলো উৎপাদনে এমন এক আমূল ও দ্রুত পরিবর্তন, যা পুরো সমাজকে নতুন রূপ দেয়।

শিল্প বিপ্লব হলো আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া এমন এক ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া, যখন হাতে তৈরি পণ্যের বদলে যান্ত্রিক উপায়ে কারখানাভিত্তিক উৎপাদন শুরু হয়। এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি ছিল বাষ্পীয় ইঞ্জিন, কয়লা ও লোহার ব্যবহার। এটি কৃষিনির্ভর সমাজকে শিল্পনির্ভর সমাজে রূপান্তরিত করে, যার ফলে নগরায়ন বৃদ্ধি পায়, নতুন শ্রেণির জন্ম হয় এবং মানুষের জীবনযাত্রায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসে।

১। অগবার্ন (Ogburn): অগবার্ন শিল্প বিপ্লবকে একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হিসেবে দেখেন, যেখানে যান্ত্রিক আবিষ্কার সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনে।

২। কার্ল মার্কস (Karl Marx): কার্ল মার্কস শিল্প বিপ্লবকে অর্থনৈতিক এবং শ্রেণি সংগ্রামের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেন। তার মতে, এটি পুঁজিবাদের বিকাশের একটি অপরিহার্য ধাপ, যেখানে মালিক (বুর্জোয়া) এবং শ্রমিক (প্রলেতারিয়েত) শ্রেণির মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

৩। এমিল ডুর্খেইম (Émile Durkheim): এমিল ডুর্খেইম শিল্প বিপ্লবকে সমাজের শ্রম বিভাজন বৃদ্ধির একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করেন, যা সমাজের সংহতিকে যান্ত্রিক থেকে জৈব সংহতিতে রূপান্তরিত করে।

৪। ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber): ম্যাক্স ওয়েবার মনে করেন, শিল্প বিপ্লব আধুনিক পুঁজিবাদের উত্থানের সঙ্গে যুক্ত, যা যুক্তিবাদী চিন্তা এবং প্রটেস্ট্যান্ট নৈতিকতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

৫। আর্নল্ড টয়েনবি (Arnold Toynbee): ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আর্নল্ড টয়েনবি ১৮৮৪ সালে তাঁর বক্তৃতায় প্রথম ‘শিল্প বিপ্লব’ শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, এটি হলো যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার, বাষ্পীয় শক্তির আবিষ্কার, এবং কারখানার প্রতিষ্ঠা, যা অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। (It is the substitution of competition for the medieval regulations which had previously controlled the production and distribution of wealth)

৬। টি. এস. অ্যাশটন (T. S. Ashton): তাঁর মতে, শিল্প বিপ্লব হলো এমন একটি সময়, যখন উৎপাদন পদ্ধতি, জনসংখ্যা এবং সামাজিক কাঠামোর মধ্যে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। (The Industrial Revolution is a convenient term to describe the great changes which took place in England during the last quarter of the eighteenth century and the first half of the nineteenth)

৭। ডেভিড ল্যান্ডেস (David Landes): এই অর্থনীতিবিদ শিল্প বিপ্লবকে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের একটি ধারা হিসেবে দেখেন, যা মানুষের উৎপাদন ক্ষমতা এবং জীবনযাত্রার মানকে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি করে। (The Industrial Revolution was a complex of changes in technology, institutions, and values that gave rise to a new form of society)

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি, শিল্প বিপ্লব হলো এমন এক ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া, যা অষ্টাদশ শতাব্দীতে যুক্তরাজ্যে শুরু হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রক্রিয়ায় যন্ত্রের ব্যবহার ও কারখানার প্রসারের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসে, যা সমাজ, অর্থনীতি এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ধরনকে পুরোপুরি বদলে দেয়। এটি মানব ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যখন কৃষিভিত্তিক সমাজ রূপান্তরিত হয়ে আধুনিক শিল্প সমাজে পরিণত হয়।

শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলি:-

১। কর্মসংস্থান হ্রাস: শিল্প বিপ্লবের ফলে হস্তচালিত শিল্প ও কুটির শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়, কারণ বড় বড় কারখানায় উৎপাদিত পণ্য কম দামে বাজারে আসতে শুরু করে। এর ফলে হাজার হাজার কারিগর ও শ্রমিক তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা হারায় এবং বেকারত্বের শিকার হয়। নতুন কারখানাগুলোতে যে পরিমাণ কাজ তৈরি হয়েছিল, তা এই বিশাল সংখ্যক বেকার মানুষের জন্য যথেষ্ট ছিল না। এই কর্মসংস্থান হ্রাস সমাজে ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং দারিদ্র্য তৈরি করে, যা সামাজিক অস্থিরতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ কাজের সন্ধানে শহরমুখী হয়, কিন্তু সেখানেও কর্মসংস্থানের অভাব প্রকট ছিল।

২। শিশুশ্রমের ব্যাপকতা: কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের বেতন ছিল খুবই কম, যা দিয়ে একটি পরিবারের পক্ষে জীবনধারণ করা প্রায় অসম্ভব ছিল। ফলে পরিবারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে শিশুরা কারখানায় কাজ করতে বাধ্য হতো। তাদের ছোট শরীর এবং সূক্ষ্ম হাতের কারণে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হতো। দীর্ঘ সময় ধরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করার ফলে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হতো এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতো। এটি ছিল মানব ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর ও অমানবিক একটি দিক, যা সমাজে গভীর নৈতিক সংকট তৈরি করেছিল।

৩। অস্বাস্থ্যকর নগরজীবন: শিল্প বিপ্লবের ফলে গ্রামীণ জনপদ থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে শহরে আসতে শুরু করে, যা নগরায়ণের গতিকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু শহরগুলো এই বিশাল সংখ্যক মানুষের চাপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল না। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে শহরে তৈরি হয় ঘিঞ্জি বসতি, অপর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব। এর ফলে বিভিন্ন রোগ, যেমন- কলেরা, টাইফয়েড, এবং যক্ষ্মার মতো মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। শহরের বাতাস দূষিত হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা নগরবাসীর স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।

৪। নিম্ন মজুরি: শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের শ্রম শোষণ ছিল একটি সাধারণ ঘটনা। মালিকরা শ্রমিকদেরকে ন্যূনতম মজুরি প্রদান করত, যা দিয়ে তাদের জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব ছিল। শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে বাধ্য হলেও তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হতো। এই কম মজুরির কারণে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়নি, বরং তা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শ্রমিকদের অর্থনৈতিক দুর্দশা সমাজে শ্রেণি বৈষম্যকে আরও তীব্র করে তুলেছিল।

৫। দীর্ঘ কর্মঘণ্টা: কারখানাগুলোতে শ্রমিকদেরকে কোনো প্রকার ছুটি বা বিশ্রাম ছাড়াই দীর্ঘ সময়, প্রায় ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা, কাজ করতে বাধ্য করা হতো। অনেক সময় তারা রাতেও কাজ করত। এই দীর্ঘ কর্মঘণ্টা শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলত। তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ত, যার ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যেত। শ্রমিকদের নিজস্ব জীবন বলতে কিছু ছিল না, তাদের পুরো জীবনটাই কারখানার কঠিন শ্রমের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল।

৬। নারী শ্রমিকের শোষণ: নারীরাও শ্রমিক হিসেবে কারখানায় কাজ করত, কিন্তু তাদের বেতন পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় অনেক কম ছিল। তাদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া হতো এবং প্রায়শই তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হতো। গর্ভবতী নারীরাও কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য হতো, যা তাদের এবং তাদের অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করত। সমাজে নারীদেরকে কেবল কম মজুরির শ্রমিক হিসেবে দেখা হতো, যা তাদের সামাজিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তোলে।

৭। শ্রমিক আন্দোলন: শ্রমিকদের উপর চলতে থাকা শোষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক আন্দোলন গড়ে ওঠে। তারা তাদের অধিকার, যেমন- নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা, ন্যায্য মজুরি এবং ভালো কাজের পরিবেশের দাবি জানায়। এসব আন্দোলন প্রায়শই সহিংস রূপ নিত এবং মালিক ও সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হতো। তা সত্ত্বেও, এই আন্দোলনগুলো পরবর্তীকালে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের পথ প্রশস্ত করে।

৮। শ্রেণিবৈষম্য বৃদ্ধি: শিল্প বিপ্লব সমাজে একটি নতুন শ্রেণির জন্ম দেয়, যা হলো পুঁজিপতি বা শিল্পপতি শ্রেণি। এই শ্রেণি কারখানার মালিকানা লাভ করে এবং বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়। অন্যদিকে, শ্রমিক শ্রেণি কেবল তাদের শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। এর ফলে সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান আরও বেড়ে যায়। এই শ্রেণিবৈষম্য সমাজে অসন্তোষ, সংঘাত এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৯। পরিবেশ দূষণ: কারখানার ধোঁয়া এবং বর্জ্য পদার্থের কারণে বাতাস, পানি এবং মাটি ব্যাপকভাবে দূষিত হয়। কয়লার ব্যবহার বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। কলকারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা হতো, যা জলজ প্রাণীর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছিল। এই পরিবেশ দূষণ শুধু সে সময়ের জন্যই নয়, বরং আজও এর নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

১০। স্বাস্থ্য ঝুঁকি: কলকারখানার অস্বাস্থ্যকর এবং বিপদজনক পরিবেশে কাজ করার ফলে শ্রমিকরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকির শিকার হতো। যন্ত্রপাতির ধুলো, রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার এবং বায়ু দূষণের কারণে শ্রমিকরা ফুসফুসের রোগ, চর্মরোগ এবং অন্যান্য নানা ধরনের অসুস্থতায় ভুগতো। এছাড়াও, দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে শারীরিক ক্লান্তি এবং মানসিক চাপ তাদের স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করে তুলেছিল।

১১। অপরাধ বৃদ্ধি: অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের কারণে শহরে অপরাধের হার বেড়ে যায়। চুরি, ডাকাতি এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে। দরিদ্র ও বেকার মানুষরা প্রায়শই বেঁচে থাকার জন্য অপরাধের আশ্রয় নিত। শহরের ঘিঞ্জি ও নোংরা বস্তিগুলো অপরাধীদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল। এই অপরাধ বৃদ্ধি নগরজীবনকে আরও অনিরাপদ করে তুলেছিল।

১২। প্রযুক্তিগত একপেশে উন্নয়ন:  শিল্প বিপ্লব মূলত উৎপাদনমুখী প্রযুক্তির উন্নয়নে জোর দেয়, কিন্তু সামাজিক ও মানবিক দিকগুলোর প্রতি তেমন মনোযোগ দেওয়া হয়নি। প্রযুক্তির এই একপেশে উন্নয়ন মানব সমাজের সামগ্রিক কল্যাণে বাধা সৃষ্টি করে। নতুন প্রযুক্তি মানব জীবনকে সহজ করার বদলে অনেক ক্ষেত্রে আরও জটিল করে তোলে, যেমন- যন্ত্রের দাসত্ব বা কাজের একঘেয়েমি।

১৩। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়: অর্থনৈতিক লাভের নেশা এবং যান্ত্রিক জীবনের চাপে মানুষের মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে। শ্রমিকদেরকে কেবল উৎপাদন প্রক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবে দেখা হতো, কোনো মানুষ হিসেবে নয়। সহমর্মিতা, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সামাজিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ে। মানুষ তার নিজের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করে, যা সমাজে নৈতিক সংকট তৈরি করে।

১৪। শিক্ষাব্যবস্থার অবহেলা: শিল্প বিপ্লবের সময় শ্রমিক শ্রেণির শিশুরা তাদের পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারত না। তাদের অধিকাংশই খুব অল্প বয়স থেকেই কারখানায় কাজ করতে বাধ্য হতো। এর ফলে শিক্ষার অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হতো। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এই বিশাল জনগোষ্ঠী ভবিষ্যতে সমাজের উন্নয়নে তেমন কোনো অবদান রাখতে পারেনি।

১৫। সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: শিল্প বিপ্লবের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। গ্রামীণ জীবন থেকে যান্ত্রিক ও শহুরে জীবনে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে মানুষের সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসে। যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার প্রথা গড়ে ওঠে। স্থানীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধীরে ধীরে বিলীন হতে থাকে। নতুন ধরনের বিনোদন এবং সামাজিক রীতিনীতির উদ্ভব ঘটে, যা পুরোনো সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

১৬। রাজনৈতিক অস্থিরতা: শ্রমিকদের শোষণ এবং সামাজিক বৈষম্যের কারণে সমাজে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজনৈতিক দল এবং আন্দোলন গড়ে তোলে। এসব আন্দোলন প্রায়শই সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হতো। এই অস্থিরতা বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে এবং ভবিষ্যতে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদের জন্ম দেয়।

১৭। সম্পদের অসম বণ্টন: শিল্প বিপ্লব সমাজে সম্পদ বণ্টনে একটি বিশাল বৈষম্য তৈরি করে। কারখানার মালিকরা বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়, অন্যদিকে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। এই অসম বণ্টন সমাজে অর্থনৈতিক সংকট এবং দারিদ্র্যকে আরও তীব্র করে তোলে। এর ফলে সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পায়, যা সামাজিক সংঘাতের জন্ম দেয়।

উপসংহার: শিল্প বিপ্লব একদিকে যেমন মানব সমাজকে আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়েছিল, তেমনি এর ফলে সৃষ্ট নানাবিধ সমস্যা মানব জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। এই বিপ্লব সমাজের ভেতরের দুর্বলতাগুলোকে প্রকট করে তুলেছিল এবং শ্রমিকদের দুর্দশা, পরিবেশ দূষণ ও সামাজিক বৈষম্যের মতো গুরুতর সমস্যার জন্ম দিয়েছিল। এই সমস্যাগুলোর সমাধান আজও আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

একনজরে উত্তর দেখুন
  1. 🏭 কর্মসংস্থান হ্রাস
  2. 👶 শিশুশ্রমের ব্যাপকতা
  3. 🏙️ অস্বাস্থ্যকর নগরজীবন
  4. 💰 নিম্ন মজুরি
  5. ⏰ দীর্ঘ কর্মঘণ্টা
  6. 👩 নারী শ্রমিকের শোষণ
  7. ✊ শ্রমিক আন্দোলন
  8. ⚖️ শ্রেণিবৈষম্য বৃদ্ধি
  9. 🌍 পরিবেশ দূষণ
  10. 🤧 স্বাস্থ্য ঝুঁকি
  11. 👮 অপরাধ বৃদ্ধি
  12. ⚙️ প্রযুক্তিগত একপেশে উন্নয়ন
  13. 🙏 মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়
  14. 🏫 শিক্ষাব্যবস্থার অবহেলা
  15. 🎨 সাংস্কৃতিক পরিবর্তন
  16. 🏛️ রাজনৈতিক অস্থিরতা
  17. 💸 সম্পদের অসম বণ্টন।
প্রশ্নটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে আইন ও সংস্কার আনা হয়। ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ‘ফ্যাক্টরি অ্যাক্ট’ পাস করে, যা শিশুদের কাজের সময় সীমিত করে এবং তাদের জন্য কিছু ন্যূনতম কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে। ১৮৪২ সালের ‘মাইনস অ্যান্ড কোলফিল্ডস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, ১০ বছরের কম বয়সী শিশু এবং নারীদেরকে ভূগর্ভস্থ কয়লার খনিতে কাজ করা নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া, ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস তাদের ‘কমিউনিস্ট ইশতেহার’-এ শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন, যা বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলো পরবর্তীকালে সামাজিক বিজ্ঞান, অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক দর্শনের নতুন নতুন শাখার জন্ম দেয়।

Tags: শিল্প বিপ্লবশিল্প বিপ্লব কাকে বলে?শিল্প বিপ্লব কী?শিল্প বিপ্লব বলতে কি বুঝ?শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট সমস্যাবলিশিল্প বিপ্লবের সজ্ঞা দাও।
  • Previous গ্রামীণ সমাজসেবা কী? বাংলদেশে গ্রামীণ সমাজসেবার বিবরণ দাও।
  • Next কল্যাণ রাষ্ট্র কি? কল্যাণ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
Read Aim

SUBSCRIBE


    JOB CIRCULAR

    • Media/Ads/Event Mngnt (145)
    • Medical/Pharmaceutical (123)
    • NGO/Organization (323)
    • Production/Operation (142)
    • Research/Consultancy (85)
    • Secretary/Receptionist (188)
    • Security/Support Service (99)
    • Others (59)

    LEARNING & EARNING

    • English Article
    • Bearded Dragon
    • Cats
    • Dogs
    • Guinea Pigs
    • Insurance
    • Lawyer
    • Rabbits
    • Earn Money Online
    • Others

    CATEGORIES

    • Computer (12)
    • English Article (27)
    • GRAMMAR (138)
    • Health Tips (2)
    • Honours (973)
    • Jobs (16)
    • Jobs Study (33)
    • News (1140)
    • PDF BOOK (78)

    RECENT POST

    চাহিদা ও ব্যায় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ধারণাটি চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা কর।
    চাহিদা বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ও ব্যায় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি ধারণাটি চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা কর।
    ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি ব্যাখ্যা কর।
    ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ বিধিটি ব্যাখ্যা কর।
    যোগান বিধির ব্যতিক্রম সমূহ কী?
    যোগান বিধির ব্যতিক্রম সমূহ কী?
    যোগান বিধি কাকে বলে? / যোগান বিধিটি ব্যাখ্যা কর।
    যোগান বিধি কাকে বলে? / যোগান বিধিটি ব্যাখ্যা কর।

    2025 All Rights Reserved readaim.com

    • Contact
    • About
    • Privacy
    • Blog
    • READ AIM