- readaim.com
- 0

উত্তর::উপস্থাপনা:- সমাজের চাকা সবসময় ঘোরে। সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রায়, চিন্তাভাবনায়, এবং সামাজিক কাঠামোয় পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, বরং এর পেছনে দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া কাজ করে। সামাজিক পরিবর্তনের এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব হলো ডব্লিউ ডব্লিউ রস্টোর আধুনিকীকরণ তত্ত্ব। এই তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করে কিভাবে একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজ আধুনিক সমাজে রূপান্তরিত হয়, এবং এই পরিবর্তনের পথে কী কী ধাপ অতিক্রম করতে হয়। চলুন, সহজ ভাষায় এই আকর্ষণীয় তত্ত্বটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক।
১.ঐতিহ্যবাহী সমাজ (The Traditional Society): রস্টোর তত্ত্বের প্রথম ধাপে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সমাজ। এই সমাজে কৃষি প্রধান অর্থনীতির প্রাধান্য দেখা যায়। জীবনযাত্রার মান থাকে নিম্ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত থাকে এবং সামাজিক কাঠামো থাকে rigid বা অনমনীয়। পরিবার ও গোষ্ঠীভিত্তিক সম্পর্কের গুরুত্ব এখানে অপরিসীম। উনিশ শতকের পূর্বে বিশ্বের অধিকাংশ সমাজ এই স্তরে বিদ্যমান ছিল। উদাহরণস্বরূপ, প্রাক-শিল্প বিপ্লব ইউরোপের গ্রামীণ সমাজ বা উনিশ শতকের শুরুতে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
২.প্রাক-শর্ত সৃষ্টির পর্যায় (The Preconditions for Take-off): এই ধাপে ঐতিহ্যবাহী সমাজ পরিবর্তনের জন্য কিছু পূর্বশর্ত তৈরি করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ শুরু হয়, পরিবহন ও যোগাযোগের সামান্য উন্নতি ঘটে এবং একটি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ হতে দেখা যায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে অল্প পরিসরে বিনিয়োগ শুরু হয়। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপে এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনেক উন্নয়নশীল দেশে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ভারতে রেলপথ স্থাপন বা শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাথমিক প্রসার এই পর্যায়ের উদাহরণ।
৩.উল্লম্ফনের পর্যায় (The Take-off): এই পর্যায়টি আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখানে দ্রুত শিল্পায়ন শুরু হয়, নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপিত হয় এবং বিনিয়োগের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসে এবং উদ্যোক্তা শ্রেণীর বিকাশ ঘটে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ব্যবহার বাড়ে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত গতি লাভ করে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের সূচনা এবং বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন এই স্তরের উদাহরণ।
৪.পরিপক্কতার দিকে ধাবিত পর্যায় (The Drive to Maturity): উল্লম্ফনের পর্যায় সফলভাবে অতিক্রম করার পর সমাজ পরিপক্কতার দিকে ধাবিত হয়। এই পর্যায়ে অর্থনীতি আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়, ভারী শিল্পের বিকাশ ঘটে এবং প্রযুক্তির ব্যবহার সমাজের সকল স্তরে ছড়িয়ে পড়ে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় এবং জনগণের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়ে। সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরো স্থিতিশীল ও কার্যকর হয়ে ওঠে। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে পশ্চিমা ইউরোপের দেশগুলো এবং উত্তর আমেরিকার অনেক দেশ এই স্তরে পৌঁছেছিল।
৫.ব্যাপক ভোগের পর্যায় (The Age of High Mass Consumption): এটি আধুনিকীকরণ তত্ত্বের শেষ পর্যায়। এই স্তরে জনগণের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত উন্নত হয়। ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার ব্যাপক আকার ধারণ করে। সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা শক্তিশালী হয়। জনগণের মনোযোগ উৎপাদন থেকে ভোগ এবং জীবনযাত্রার গুণগত মান উন্নয়নের দিকে ধাবিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ এই পর্যায়ে প্রবেশ করে।
৬.প্রযুক্তির প্রভাব: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবহার কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, এবং শিক্ষা সহ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। প্রযুক্তির প্রসারের ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার বা বিংশ শতাব্দীতে কম্পিউটারের উদ্ভাবন আধুনিকীকরণের গতিকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
৭.নগরায়ণ ও শিল্পায়ন: আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো নগরায়ণ ও শিল্পায়ন। শিল্প কারখানা স্থাপনের ফলে গ্রাম থেকে শহরের দিকে মানুষের অভিবাসন বাড়ে। শহরগুলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হয়। এর ফলে নতুন নতুন সামাজিক সমস্যা ও সুযোগের সৃষ্টি হয়। বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত নগরায়ণ দেখা গেছে।
৮.শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি: আধুনিক সমাজে শিক্ষার প্রসার অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী নতুন ধারণা ও প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী হয় এবং সমাজের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে আরও সোচ্চার হয়। বিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন দেশে সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন এর গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
৯.যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: আধুনিকীকরণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে পণ্য ও মানুষের চলাচল সহজ হয়, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক। ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের মতো আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে।
১০. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান: আধুনিকীকরণের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকাশ এবং আইনের শাসনের প্রতিষ্ঠা অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। বিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের অনেক দেশে গণতন্ত্রের প্রসার ঘটেছে।
১১.সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন: আধুনিকীকরণের সাথে সাথে সমাজের চিরাচরিত কাঠামোয় পরিবর্তন আসে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য হ্রাস পায় এবং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সামাজিক মর্যাদা নির্ধারিত হতে শুরু করে। নারীর ক্ষমতায়ন এই পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
১২.মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: আধুনিক সমাজে মানুষের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসে। ঐতিহ্যবাহী ধ্যানধারণার পরিবর্তে যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটে। ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বৃদ্ধি পায়।
১৩.আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসারের ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায় এবং প্রযুক্তি ও জ্ঞানের আদান-প্রদান সহজ হয়। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO) এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৪.জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থানান্তর: আধুনিকীকরণের প্রাথমিক পর্যায়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি সাধারণ ঘটনা। উন্নত স্বাস্থ্যসেবার কারণে মৃত্যুহার হ্রাস পায় এবং জন্মহার তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। পরবর্তীতে শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে জন্মহার হ্রাস পায়। কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে শহরে এবং এক দেশ থেকে অন্য দেশে মানুষের স্থানান্তরও আধুনিকীকরণের একটি অংশ।
১৫.পরিবেশের উপর প্রভাব: আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার একটি নেতিবাচক দিক হলো পরিবেশের উপর এর প্রভাব। শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে বায়ু দূষণ, জল দূষণ, বনভূমি ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। টেকসই উন্নয়নের ধারণা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
১৬.সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: আধুনিকীকরণের সাথে সাথে মানুষের সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আসে। পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, বিনোদন এবং জীবনযাত্রার অন্যান্য ক্ষেত্রে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব অনেক দেশে লক্ষ্য করা যায়। তবে অনেক দেশ নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষার চেষ্টা করে।
১৭.সামাজিক inequality বা বৈষম্য: আধুনিকীকরণ সত্ত্বেও অনেক সমাজে আয় বৈষম্য এবং সুযোগের অভাব দেখা যায়। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধি পেতে পারে, যা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। समावेशী উন্নয়নের মাধ্যমে এই বৈষম্য কমানো সম্ভব।
১৮.স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি: আধুনিক সমাজে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক উন্নতি ঘটে। উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তি, ঔষধ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মানুষের গড় আয়ু বাড়ে এবং শিশুমৃত্যুর হার কমে আসে। বিংশ শতাব্দীতে বিভিন্ন মারাত্মক রোগের টিকা আবিষ্কার এর গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
১৯.কৃষির আধুনিকীকরণ: আধুনিকীকরণের ফলে কৃষিক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন আসে। উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক এবং আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ব্যবহারের ফলে উৎপাদনশীলতা অনেক বৃদ্ধি পায়। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হয়।
২০.ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ: আধুনিক অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য আনতে সহায়ক। বিভিন্ন দেশে এই শিল্পের প্রসারের জন্য সরকার নানা ধরনের নীতি গ্রহণ করে।
২১.তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব: বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ এবং একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) বিপ্লব আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এবং সামাজিক মাধ্যম মানুষের জীবনযাত্রায় এবং অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। ই-কমার্স এবং অনলাইন শিক্ষা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
শেষ কথা:- ডব্লিউ ডব্লিউ রস্টোর আধুনিকীকরণ তত্ত্ব একটি সমাজ কিভাবে ঐতিহ্যবাহী অবস্থা থেকে আধুনিক অবস্থায় রূপান্তরিত হয় তার একটি সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। তত্ত্বটি পরিবর্তনের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এবং এর সাথে জড়িত বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক আলোচনা করে। যদিও এই তত্ত্বের কিছু সমালোচনা রয়েছে, তবুও এটি সামাজিক পরিবর্তন এবং উন্নয়নের প্রক্রিয়া বুঝতে আজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আধুনিক বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনকে এই তত্ত্বের আলোকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
ঐতিহ্যবাহী সমাজ, প্রাক-শর্ত সৃষ্টির পর্যায়, উল্লম্ফনের পর্যায়, পরিপক্কতার দিকে ধাবিত পর্যায়, ব্যাপক ভোগের পর্যায়, প্রযুক্তির প্রভাব, নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থানান্তর, পরিবেশের উপর প্রভাব, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন, সামাজিক inequality বা বৈষম্য, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, কৃষির আধুনিকীকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপ্লব।
রস্টোর তত্ত্ব ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়, যখন বিশ্বের মাত্র ২০% দেশ শিল্পায়িত ছিল। ২০২০ সালের বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এখন ৬০% দেশ আধুনিকায়নের পথে রয়েছে। তবে, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশ এখনও ঐতিহ্যবাহী পর্যায়ে আছে। ১৯৯০-এর দশকে এশিয়ান টাইগার দেশগুলি (সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া) রস্টোর মডেল ভিন্নভাবে অনুসরণ করে দ্রুত উন্নয়ন করে, যা এই তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ করে।