- readaim.com
- 0
উত্তর::ভূমিকা: অর্থনীতিতে পূর্ণ কর্মসংস্থান স্তরের উৎপাদনের চেয়ে সামগ্রিক চাহিদা অতিরিক্ত হলে মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক সৃষ্টি হয়, যা মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দেয়। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার সংকোচনমূলক রাজস্ব নীতি (যেমন: সরকারি ব্যয় হ্রাস ও কর বৃদ্ধি) এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রা নীতি (যেমন: সুদের হার বৃদ্ধি) প্রয়োগের মাধ্যমে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
১।রাজস্ব নীতি প্রয়োগ: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে সরকার বিভিন্ন ধরনের রাজস্ব নীতি ব্যবহার করে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান উপায় হলো সরকারি ব্যয় কমানো। সরকার যখন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প, অবকাঠামো নির্মাণ, বা অন্য কোনো খাতে ব্যয় কমিয়ে দেয়, তখন বাজারে টাকার সরবরাহ হ্রাস পায়। ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে আসে এবং অতিরিক্ত চাহিদা নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে পণ্যের দামের উপর চাপ কমে আসে, যা মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে সাহায্য করে। এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর কৌশল, কারণ এটি সরাসরি অর্থনীতির মোট চাহিদাকে প্রভাবিত করে।
২।কর বৃদ্ধি: সরকার করের হার বৃদ্ধি করে মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে পারে। যখন সরকার আয়কর, ভ্যাট, বা অন্য কোনো পরোক্ষ করের হার বাড়িয়ে দেয়, তখন মানুষের হাতে থাকাDisposable income বা ব্যবহারযোগ্য আয় কমে যায়। এর ফলে মানুষ কম খরচ করে এবং বাজারে সামগ্রিক চাহিদা কমে আসে। চাহিদা কমে গেলে দামের উপর চাপও কমে যায়। এটি অর্থনীতিতে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। কর বৃদ্ধি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার যা দ্রুত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
৩।সরকারী ঋণ হ্রাস: সরকার জনসাধারণের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করে মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে পারে। যখন সরকার বন্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটি বিক্রি করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ ধার নেয়, তখন সেই অর্থ অর্থনীতি থেকে সরে আসে। ফলে বাজারে নগদ টাকার সরবরাহ কমে যায়, যা মানুষের ব্যয় করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এর মাধ্যমে মোট চাহিদা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ হ্রাস পায়। এটি এক প্রকার মুক্ত বাজার কার্যক্রম যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকারের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়।
৪।নগদ জমা অনুপাত বৃদ্ধি: কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নগদ জমা অনুপাত (Cash Reserve Ratio – CRR) বৃদ্ধি করতে পারে। CRR হলো সেই অনুপাত যা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের মোট জমার একটি নির্দিষ্ট অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক CRR বাড়িয়ে দেয়, তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ দেওয়ার জন্য টাকার পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে ব্যাংকগুলো কম ঋণ দিতে পারে এবং বাজারে অর্থের সরবরাহ সংকুচিত হয়, যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৫।খোলা বাজার কার্যক্রম: কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলা বাজারে সরকারি বন্ড বা সিকিউরিটিজ বিক্রি করে মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক দূর করতে পারে। যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বন্ডগুলো বিক্রি করে, তখন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং সাধারণ মানুষ সেগুলো কেনে। ফলে এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে চলে আসে এবং বাজারে টাকার সরবরাহ কমে যায়। অর্থের সরবরাহ কমে গেলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমে যায়, যা সামগ্রিক চাহিদা কমিয়ে দেয় এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া যা বাজারের অবস্থা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়।
৬।ব্যাংক হার বৃদ্ধি: কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে হারে ঋণ দেয়, তাকে ব্যাংক হার (Bank Rate) বলা হয়। মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ব্যাংক হার বাড়িয়ে দিতে পারে। যখন ব্যাংক হার বেড়ে যায়, তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। এর ফলে তারা গ্রাহকদের কাছেও বেশি সুদে ঋণ দেয়। উচ্চ সুদের হারের কারণে মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কম ঋণ নেয় এবং বিনিয়োগ কমে যায়, যা অর্থনীতিতে চাহিদা কমিয়ে আনে।
৭।রিপো রেট বৃদ্ধি: রিপো রেট (Repo Rate) হলো সেই সুদহার, যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে স্বল্পমেয়াদী ঋণ নেয়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই হার বাড়িয়ে দেয়। রিপো রেট বাড়লে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হয়ে যায়, যার ফলে তারা নিজেদের গ্রাহকদের জন্য ঋণের সুদহার বাড়িয়ে দেয়। এর ফলস্বরূপ বাজারে ঋণের পরিমাণ কমে যায়, বিনিয়োগ ও খরচ হ্রাস পায়, এবং মোট চাহিদা কমে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
৮।সংরক্ষিত তারল্য অনুপাত বৃদ্ধি: সংরক্ষিত তারল্য অনুপাত (Statutory Liquidity Ratio – SLR) হলো সেই অনুপাত যা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তাদের মোট জমার একটি নির্দিষ্ট অংশ তরল সম্পদ (যেমন- স্বর্ণ, সরকারি সিকিউরিটিজ) হিসেবে নিজেদের কাছে রাখতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে SLR-এর হার বাড়িয়ে দিতে পারে। যখন SLR বৃদ্ধি পায়, তখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ দেওয়ার জন্য কম টাকা থাকে, যা বাজারে অর্থের সরবরাহ কমিয়ে দেয় এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৯।নতুন মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ: নতুন মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা মুদ্রাস্ফীতি কমানোর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন টাকা ছাপানো এবং বাজারে তার সরবরাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। যখন অর্থনীতিতে অতিরিক্ত নগদ টাকা থাকে, তখন মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়ে। নতুন মুদ্রা ছাপানো বন্ধ করে বা তার পরিমাণ সীমিত করে বাজারে অর্থের জোগান কমানো সম্ভব হয়, যা মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
১০।সরকার খরচ হ্রাস: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে সরকার তার বিভিন্ন ধরণের ব্যয় যেমন অবকাঠামো প্রকল্প, সরকারি বেতন, ভর্তুকি ইত্যাদি হ্রাস করতে পারে। সরকারের ব্যয় হ্রাস পেলে বাজারে মোট অর্থের সরবরাহ কমে আসে, যার ফলে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। এতে পণ্যের চাহিদা কমে যায় এবং দামের উপর চাপও কমে আসে। এই পদ্ধতিটি অর্থনীতির অতিরিক্ত তাপকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে এবং মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১১।ঘাটতি বাজেট পরিহার: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক দেখা দিলে সরকার ঘাটতি বাজেট (Deficit Budget) পরিহার করতে চেষ্টা করে। ঘাটতি বাজেটে সরকারের আয় থেকে ব্যয় বেশি হয়, যা পূরণ করতে প্রায়শই নতুন নোট ছাপানো হয় অথবা ঋণ নেওয়া হয়। এই অতিরিক্ত অর্থ বাজারে এলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দেয়। তাই, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার একটি সুষম বাজেট বা উদ্বৃত্ত বাজেট প্রণয়নের দিকে মনোনিবেশ করে, যেখানে ব্যয় আয়ের সমান বা তার চেয়ে কম হয়।
১২।আমদানি নীতি শিথিলকরণ: সরকার মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমাতে আমদানি নীতি শিথিল করতে পারে। যখন দেশীয় বাজারে কোনো পণ্যের সরবরাহ কম থাকে এবং চাহিদা বেশি থাকে, তখন সরকার সেই পণ্য আমদানির উপর শুল্ক বা কর কমিয়ে দেয়। এর ফলে সেই পণ্যটি বিদেশ থেকে সহজে এবং কম দামে আমদানি করা যায়। এতে বাজারে সেই পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং দামের উপর চাপ কমে আসে, যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
১৩।উৎপাদন বৃদ্ধি: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক দূর করার একটি দীর্ঘমেয়াদী এবং কার্যকর উপায় হলো দেশের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করা। যখন কোনো পণ্যের সরবরাহ তার চাহিদা অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়, তখন দাম স্থিতিশীল থাকে বা কমে আসে। সরকার শিল্প, কৃষি এবং পরিষেবা খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা, ভর্তুকি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করতে পারে। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে সরবরাহের অভাব দূর হয়, যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
১৪।মজুরি নিয়ন্ত্রণ: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক কমাতে মজুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি বিতর্কিত কিন্তু কার্যকর উপায় হতে পারে। যখন মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকে, তখন শ্রমিকরা বেশি মজুরি দাবি করে। বেশি মজুরি পেলে তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে এবং চাহিদা আরও বেড়ে যায়, যা মুদ্রাস্ফীতির একটি চক্র তৈরি করে। সরকার বা প্রতিষ্ঠান মজুরি বৃদ্ধিকে মুদ্রাস্ফীতির হারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে এই চক্র ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয় এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ হ্রাস পায়।
১৫।মূল্য নিয়ন্ত্রণ: অনেক সময় সরকার জরুরি পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরাসরি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে বা নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয়, যাতে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম নিতে না পারে। এই পদ্ধতিটি স্বল্পমেয়াদী হলেও দ্রুত মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমাতে সহায়ক হয়। তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রয়োগে পণ্যের অভাব বা কালোবাজারি সৃষ্টি হতে পারে।
১৬।কালো টাকা দমন: কালো টাকা হলো সেই অর্থ যা অবৈধ উপায়ে উপার্জিত এবং যার উপর কোনো কর দেওয়া হয় না। এই কালো টাকা বাজারে অতিরিক্ত চাহিদার সৃষ্টি করে এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায়। সরকার কালো টাকা দমনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে, যেমন – কালো টাকার উপর কঠোর কর আরোপ, অবৈধ লেনদেন বন্ধ করা, এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে অভিযান চালানো। কালো টাকা দমন করা গেলে অর্থনীতিতে অর্থের সরবরাহ সুশৃঙ্খল থাকে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
১৭।জনসচেতনতা বৃদ্ধি: মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বিভিন্ন প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে অতিরিক্ত খরচ না করা, সঞ্চয় বাড়ানো এবং অর্থ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারে। যখন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে যে তাদের অতিরিক্ত খরচ মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে পারে, তখন তারা নিজেদের খরচ নিয়ন্ত্রণ করে। এই সচেতনতা কার্যক্রম সামগ্রিক চাহিদা কমাতে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
উপসংহার: মুদ্রাস্ফীতির ফাঁক দূর করা একটি বহুমুখী প্রক্রিয়া যার জন্য আর্থিক, রাজস্ব এবং প্রশাসনিক নীতির একটি সমন্বিত প্রয়োগ প্রয়োজন। উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো প্রতিটি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় কার্যকর হতে পারে। একটি স্থিতিশীল এবং সুশৃঙ্খল অর্থনীতি নিশ্চিত করতে এই সকল পদক্ষেপের সঠিক এবং সময়োপযোগী প্রয়োগ অপরিহার্য। এর ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা রক্ষা পায় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই হয়।
১। 🪙 রাজস্ব নীতি প্রয়োগ ২। 💰 কর বৃদ্ধি ৩। 📉 সরকারী ঋণ হ্রাস ৪। 🏦 নগদ জমা অনুপাত বৃদ্ধি ৫। 💼 খোলা বাজার কার্যক্রম ৬। 📈 ব্যাংক হার বৃদ্ধি ৭। 📈 রিপো রেট বৃদ্ধি ৮। 📊 সংরক্ষিত তারল্য অনুপাত বৃদ্ধি ৯। 💱 নতুন মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ১০। 💲 সরকার খরচ হ্রাস ১১। 📝 ঘাটতি বাজেট পরিহার ১২। 🚢 আমদানি নীতি শিথিলকরণ ১৩। 🏭 উৎপাদন বৃদ্ধি ১৪। ⚖️ মজুরি নিয়ন্ত্রণ ১৫। 💲 মূল্য নিয়ন্ত্রণ ১৬। 💵 কালো টাকা দমন ১৭। 🗣️ জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
মুদ্রাস্ফীতির ঐতিহাসিক তথ্য থেকে দেখা যায়, ১৯২৩ সালে জার্মানির ওয়েমার প্রজাতন্ত্রে Hyperinflation দেখা দিয়েছিল, যেখানে মুদ্রাস্ফীতির হার ৪.২ ট্রিলিয়ন শতাংশে পৌঁছেছিল। এর মূল কারণ ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অতিরিক্ত নোট ছাপানো। ১৯৭০-এর দশকে OPEC তেল সংকটের কারণে বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গিয়েছিল, যা “stagflation” নামে পরিচিত। এর ফলে অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০০৮ সালের বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের পর অনেক দেশ মন্দার মুখে পড়েছিল, যার ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার হ্রাস করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে। বর্তমানে, কোভিড-১৯ মহামারীর পরে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে।

